দুই শালিক সিরিয়ালের আজকের নতুন পর্বের আপডেট,
পর্বের শুরুতে আমরা দেখতে পাই আঁখি থানা থেকে দেবা কে ছাড়িয়ে নিয়ে আসার পর। ঝিলিকের বাবা বলে মা রে তুই আজকে শুধু আমাদের মেয়ে নয়। তুই পুরো বস্তির সবার মেয়ে। ঝিলিকের মা বলে নতুন সংসার শুরু করার আগে ঠাকুরকে প্রণাম করে আয়। তারপরে আঁখি আর দেবা দুজনে মিলে ঠাকুর প্রণাম করতে যায়। দেবা ঠাকুর প্রণাম করতে গিয়ে মনে মনে বলে আমি আমার সমস্ত শপথ তুলে নিলাম। ওর উপরে আমার কোন দায় নেই। আমি ওকে ভালোবাসি না। আমি যেন ওর হাত থেকে মুক্ত পেতে পারি। আর আঁখি বলে এই সংকট থেকে আমাকে মুক্ত করো মা। আমি যেন আঁখি হয়েই ওকে ভালবাসতে পারি। আর আমার ভালবাসা যদি সত্যি হয় তাহলে ও আখি কেই ভালোবাসবে। আমি যেন ওর স্ত্রী হওয়ার সব দায়িত্ব পালন করতে পারি। আমি যেন আমার সংসারটাকে বাঁচাতে পারি। অন্যদিকে পি আর কে এর কাছে থানা থেকে কল আসে। বলে আপনার জন্য আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। আমি দেবা কে ছাড়িনি বলে আপনার ছেলে উপর মহলে কমপ্লেইন করেছে। আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আপনাকে আর আপনার ছেলে দু'জনকেই আমি দেখে নেব বলে ফোন কেটে দেয়।
অন্যদিকে ছাতা বাড়িতে ঝিলিক একা একা ওর রুমের ভিতর জুডো প্যাকটিস করছিল। আর মনে মনে ভাবছিলো আমি গৌরব কে আমার পরিচয়টা দিতে পারলাম না। আর বন্ধু হিসাবে দেবার পাশেও থাকতে পারলাম না। কিন্তু গৌরব কোথায় গেল ও কি থানাতে গেছিলো। আঁখি কি দেবা কে ছাড়াতে পেরেছে থানা থেকে কিছুই তো জানতে পারলাম না। এদিকে আঁখি দেবার ক্ষত স্থানে মলম লাগিয়ে দিতে গেলে দেবা বলে লাগবে না এসব কিছু। এতটুকু ব্যথায় আমার কিছু হবে না এর থেকে অনেক বেশি ব্যথা আমি সহ্য করেছি। আখি বলে কষ্ট দিতে হলে আমাকে দাও নিজেকে কেন কষ্ট দিচ্ছো। সব দোষ আমার কারণ আমি তোমার থেকে লুকিয়েসি সবকিছু। কিন্তু কোন পরিস্থিতিতে লুকিয়েসি এটা তো জানবে। সব সত্যি সব জায়গায় বলা যায়না দেবা। হয়তোবা তোমারও এমন কোনো সত্যি আছে যেটা তুমি আমাকে বলোনি। আমি যদি অপেক্ষা করতে পারি তাহলে তুমি কেনো পারবে না।আঁখি জোর করে দেবা কে মলম লাগিয়ে দিতে চাই। দেবা আখির হাত ধরে তখন আঁখি দেবার হাত সরিয়ে তারপর দেবাকে মলোম লাগিয়ে দেয়। দেবা মনে মনে ভাবে আমি তো এখন আর ওকে ভালোবাসি না তাহলে আমার কেন বুকের ভেতরটা এমন করছে।আঁখি দেবা কে বলে আমি ঝিলিক নই এটা যেমন সত্যি আমি তোমার স্ত্রী দেবা এটাও সত্যি।
অন্যদিকে ঝিলিক ছাতা বাড়িতে গৌরবের জন্য অপেক্ষা করছিল। গৌরব বাসায় আসলে ঝিলিক গৌরবকে জিজ্ঞাসা করে কোথায় গিয়েছিলেন আপনি থানায় গিয়েছিলেন। কি বললো থানা থেকে দেবা কে কি ছেড়ে দেবে। আপনি কিছু বলছেন না কেন আপনি যদি থানায় না গিয়ে থাকেন তাহলে কোথায় গিয়েছিলেন। রাগ করে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। আপনাকে আমি বারবার বলেছি আমার উপরে রাগ হলে আমাকে যা খুশি করুন কিন্তু এভাবে না বলে বেরিয়ে যাবেন না । আপনি জানেন কত টেনশন হসছিলো আপনাকে নিয়ে আমার। আপনি জানেন না আপনার বিপদ আছে। গৌরব তখন বলে জানি সেটা তো তোমার দিক থেকে। ঝিলিক বলে আমার দিক থেকে মানে। গৌরব ঝিলিক কে বলে তুমি তো মানুষও খুন করতে পারো। এখন থেকে তোমার হাতের কিছু খেতে গেলে তো আমি ভয়ে ভয়ে থাকবো। এতে কিছু মেশানো নেই তো। ঝিলিক বলে এটা আপনি কি বলছেন। গৌরব বলে যা সত্যি তাই বলছি। তোমার কথা শুনে আমি দেবা কে থানা থেকে ছাড়াতে গেছিলাম। মনে হয়েছিল ভুল করেছি।
কিন্তু আমার তো মনেই ছিল না যে আমার তো থানাতে যাওয়ার কোন দরকারই ছিল না। তুমি আছো তো দেবার জন্য। তুমি গিয়ে দেবা কে ছাড়িয়ে নিয়ে এলে। আবার আমরণ অনশন ডেকেছিলে। বস্তির লোকদের নিয়ে থানায় ঘেরাও করেছিলে। ঝিলিক বলে আমি কোথাও যাইনি আমি বাড়িতেই ছিলাম। গৌরব বলে তুমি ধরা পড়ে গেছে এবারে নাটকটা বন্ধ করো। এই ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে পি আর কে আমাকে উপহাস করছিল তুমি কি ছাতা বাড়ির বউ নাকি বস্তির বউ। ঝিলিক মনে মনে ভাবে তাহলে হয়তো বা আঁখিকে দেখেছে ওখানে। কিন্তু এখনই সব বলতে গেলে গৌরব বিশ্বাস করবে না। গৌরব বলে আমি যখনই সবকিছু ভুলে তোমাকে ভালবাসতে চাই তখনই তুমি এত কান্ড করে বসে। মায়ের কথাই তোমাকে বিয়ে করেছিলাম ভেবেছিলাম কখনো ভালবাসবো না কিন্তু বেসে ফেলেছি। ঝিলিক মনে মনে বলে যে কথাটা আমি সব সময় আপনার মুখ থেকে শুনতে চাই। এই কথাটাই আপনি আজকে আমাকে বললেন কিন্তু আমি এতটাই অসহায় যে আপনাকে সত্যিটা বলতেও পারছি না।
গৌরব বলে এতে তোমার কোন দোষ নেই আঁখি আমি একটা মিথ্যে ভালোবাসাকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করেছিলাম।হাত থেকে কাচের গেলাস পড়লে যেমন টুকরো টুকরো হয়ে যায় আমাদের সম্পর্কটাও এমন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের খেলাটা এবার এখানেই শেষ হোক আঁখি। আমি তোমাকে সব কিছু থেকে মুক্ত করলাম। আমি তোমাকে খুব শীঘ্রই ডিভোর্স দিয়ে দেবো। ঝিলিক বলে আপনি যখন সবকিছু ঠিক করে বাড়িতে ঢুকেছেন তাহলে সেটাই হবে। আপনি তো আমার কাছ থেকে কোন কিছু চাননি কখনো। আজ চাইছেন আমি আপনাকে দেবো। কোথায় কবে সই করতে হবে বলবেন করে দেবো। ভালোবাসা আপনার হাত থেকে পড়ে ভেঙেছে কিন্তু আমার হাতে এখনো অক্ষত আছে। বলে ঝিলিক ওখান থেকে চলে যায়।অন্যদিকে আমরা দেখি আঁখি সকলকে খেতে দিচ্ছিলো। কমলা মাসি ওকে অনেক কথা শুনাসসিলো। কিন্তু আঁখি কোনো কথায় উত্তর না দিয়ে চুপচাপ সবাইকে খেতে দেয়। আঁখিকে খেতে বললে ও বলে আমি পরে খাবো।সবার খাওয়া শেষ হয়ে গেলে দেবা গিয়ে দেখে হাড়িতে আর কোন খাবার নেই। দেবা তখন মনে মনে ভাবে আঁখি না খেয়ে থাকবে।