দুই শালিক সিরিয়ালের আজকের নতুন পর্ব আপডেট,
পর্বের শুরুতে আমরা দেখতে পাই ঝিলিক এবং আঁখি দুজনে গল্প করছিল। তখন দেবা গৌরব কে দেখার জন্য ওই রুমে ঢুকছিল। দেবা কে দেখে দুজনে পলায়। দেবা রুমের ভেতর ঢুকে গৌরবের পাশে বসে এবং ওর দিকে তাকিয়ে থাকে। আর বলে এতদিন তোর উপর আমার রাগ হতো বাবার নাম এক রক্ত এক তফাৎটা শুধু পরিচয় এখন তোর উপরে আমার করুণা হয়। তোর বাবা যে রক্ত কে স্বীকার করেনি আজকে সেই রক্ত তোর শরীরে। এবার পারলে অস্বীকার করে দেখাক। ঝিলিক দেবা কে দেখে মনে মনে ভাবে দেবা কি গৌরব কে দেখে কষ্ট পাচ্ছে । কিছুদিন আগে যে দেবা গৌরব কে দেখতে পারত না সহ্য করতে পারত না সে কিনা গৌরব এর জন্য কষ্ট পাচ্ছে। একটা দুর্ঘটনা মানুষকে এতটা পরিবর্তন করে দেয় কিভাবে। বস্তিতে আগুন লাগার দিনে তো এই দেবাই গৌরব স্যারের সাথে হাতাহাতি করেছিল।
দেবা গৌরব এর গায়ে হাত বুলায় আর মনে মনে বলে তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে ওঠ ভাই। তারপর ওখান থেকে বেরিয়ে যায়। আঁখি ঝিলিক কে বলে তুমি চিন্তা করো না ঝিলিক গৌরব স্যার ভালো হয়ে যাবে। আর তুমি তো বলো আমরা দুই শালিক যেখানে থাকবো সেখানে ভালোই হবে। আচ্ছা আমি এখন যাই হ্যাঁ না হলে দেবা আমাকে আবার খুঁজবে। তারপর আঁখি ওখান থেকে বেরিয়ে দেবার কাছে যাই। দেবা বলে কিরে তুই কোথায় গেছিলিস। আখি বলে আমি তো এখানেই সিলাম গৌরব স্যার কেমন আছে।দেবা বলে তু্ই ওকে স্যার কেন বলসিস। আঁখি বলে উনারা বড়ো লোক মানুস তাই বলে ফেলসি।দেবা বলে ঠিক আছে চল।
এ দিকে ঝিলিক আবার গৌরব এর কাসে গিয়ে তার পাশে বসে কান্না করে। অন্যদিকে আঁখি শ্বশুর বাড়ি যাবার সময় ওর মা খুব কান্না করে আর ঝিলিক এর ছোট বেলার সব স্মৃতি মনে করে। আঁখি বলে তুমি কান্না করো না মা। নিজের খেয়াল রেখো। ওর মা বলে সংসারটাকে নিজের মতো করে গুছিয়ে নিস মা। কেউ যেন তোর দিকে আঙ্গুল না তুলতে পারে। আখি বাবাকে ধরে কান্না করে আর বলে তোমাদের মত মা-বাবা পাওয়া খুব ভাগ্যের ব্যাপার। আখির বাবা দেবা কে বলে ছোটবেলা থেকে আমি ওর সব স্বপ্ন পূরণ করেছি কখনো কোন কিছুই কমতি রাখিনি তুই ওকে ভালো রাখিস দেবা। দেবা ওর বাবাকে কথা দেয় আমি ঝিলিক কে ভালো রাখবো ওর কোন কিছুতে কষ্ট দেবো না। আঁখি কনকাঅঞ্জলি দেওয়ার সময় মনে মনে বলে তোমার ভাগের কনকাঅঞ্জলি আমি দিয়ে দিলাম ঝিলিক। তুমি না থাকলে এমন মা-বাবা পাওয়া আমার ভাগ্যে ছিল না। এরপর আর কি কনকাঅঞ্জলি দিয়ে কান্না করতে করতে বাসা থেকে চলে যায়।
আখি চলে যাবার পর ওর মা বাবা বলে ভগবান যেন ওকে ভালো রাখে।কোনদিন কোন কিছুর কষ্ট পেতে দেইনি। ওর বাবা বলে সেদিনকে সে ছোট্ট মেয়েটা যে তোমার কোলে কেঁদে উঠেছিল। আর এখন কত বড় হয়ে গেছে আর আমরা হয়ে উঠেছি ওর সত্যি কারের বাবা-মা। ওর মা তখন বলে তুমি চুপ করো এসব কথা আর কখনো বলবে না। আমরাই ওর আসল বাবা মা তা ছাড়া ওর আর কোন পরিচয় নেই। এদিকে দেবা আঁখি কে বাড়িতে নিয়ে আসলে কমলা মাসি তাদেরকে বাড়িতে উঠতে দিতে রাজি হয় না। বলে আমি ওই মেয়েকে কখনো বউমা হিসেবে মানবো না আমি ওকে বরণ করতে পারব না। দিবা বলে চল তো কোন বরণ করার দরকার নেই। যখন চলে যাবে তখনই পল্টু বলে দাঁড়া বরণ হবে। তারপর বল্টু ভেতরে গিয়ে বরণডালা নিয়ে এসে ও নিজে বরণ করে ঘরে ওঠায় আঁখিকে।
এর পরের সিন এ আমরা দেখতে পাই রাত্রেবেলা আঁখি মন খারাপ করে বসে থাকে কমলা মাসির ওমন ব্যবহারের জন্য। দেবা আঁখি কে বোঝায় বলে হঠাৎ করে তোকে বিয়ে করে ফেলেছি তো এজন্যই এমন হয়েছে আস্তে আস্তে দেখবে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। আখি বলে সবকিছু ঠিক হয় না দেবা। ঠিক হয়ে যাবে বলতে বলতে বছর মাস কেটে যাই কিন্তু ঠিক হয় না। পল্টু আঁখি কে বলে, আরে যা হইছে হইছে সব নিয়ে তুই ভাবিস না তো। দেখ বিয়েটা যেমন তেমন হয়েছে কিন্তু বৌভাতে আমরা সকলে অনেক আনন্দ করবো। তখন চার অনা একটা মাটির ব্যাংক নিয়ে এসে দেবা কে দিয়ে বলে দেবা দা তুমি আর পল্টু দা আমাকে যা দুপাশ টাকা করে দিতে আমি সেটা জমিয়ে জমিয়ে রেখেছি এই মাটির ব্যাংকে। তুমি এটা তোমার বৌভাতে খরচ করো এখানে অনেক টাকা আছে। ছোট্ট চার আনার এমন ভাবনা দেখে ওরা অনেক খুশি হয়।আঁখি বলে কে বলে তুই চার আনা তোর দাম তো ১৬ আনার থেকেও বেশি। এত ছোট বয়সে এত বড় মন পেলি কোত্থেকে । অনেক ভাগ্য করে তাদের সবাইকে পেয়েছি।
এরপর ওরা তিনজন গ্যারেজে শুতে যাই। কারণ আজকে আখি এবং দেবার কাল রাত্রে। ওরা দুজন একে অপরের মুখ দেখতে পারবেনা। কিন্তু দেবা বারবার ফিরে আসছিল আখির কাছে এক একটা অজুহাত নিয়ে।পল্টু দেবা কে বলে তোর কাল রাত্রি পালন করতে গিয়ে আমাদের কালঘাম ছুটে যাচ্ছে এবার চল।