দুই শালিক সিরিয়ালে দেবা এবং আখির বিয়ের মহাপর্ব,
পর্বের শুরুতে আমরা দেখি দেবা এবং আঁখি দুজনে মন্দিরে যায় বিয়ে করার জন্য। ওখানে ঠাকুরের সামনে তারা দুজন দুজনের মনের কথা শেয়ার করে। দেবা ঠাকুরকে বলে আমি যেন ঝিলিক কে ভালো রাখতে পারি। এদিকে আঁখি মনে মনে বলে তোমার মন্দিরে দাঁড়িয়ে একটা মিথ্যে পরিচয় নিয়ে আমি দেবা কে বিয়ে করতে যাচ্ছি। তুমি তো জানোই কোন কিছুই আমার হাতে ছিল না। পরিচয় মিথ্যে কিন্তু আমার ভালোবাসাটা মিথ্যে নয়। আমি সত্যিই দেবা কে ভালবাসি ঠাকুর। দুজন দুজনের মনের কথা ঠাকুরের সামনে বলে একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকে। ব্যাকগ্রাউন্ড একটা সুন্দর মিউজিক বাজে। তখন সেখানে পল্টু চার আনা ওরা সবাই চলে আসে। দেবার জন্য বিয়ের শেরওয়ানি কিনে নিয়ে আসে। তারপর দেবা কে বলে নে এটা তাড়াতাড়ি পড়ে নে। পুরোহিত মশাই এখনই আসছে।
এরপরের সিনে আমরা দেখি আঁখি এবং দেবার শুভদৃষ্টি হচ্ছে। তারপর মালা বদল করে। তারপর দুজনের হস্ত বন্ধন করে। হস্ত বন্ধনের সময় ঠাকুর মশাই কোণের নাম জিজ্ঞাসা করলে আঁখি চুপ হয়ে যায় কিছু বলে না। দেবা ভাবে কি হল নিজের নাম বলছে না কেন। তখন দেবা নিজেই বলে দেয় ঝিলিক। আখি মনে মনে বলে বিয়েটা ভুল নামে হলেও আমার শাঁখা সিদরের মান আমি রাখবো। তখন ঠাকুরমশাই বলে সম্প্রদান কে করবে। কন্যা সম্প্রদান না হলে তো বিয়ে হবে না। সবাই টেনশনে পড়ে গেছিল। তখনই সেখানে আখির বাবা চলে আসে বলে সম্প্রদান আমি করব। ঠাকুরমশাই জানতে চাই উনি আপনার কে হন। উনি তখন বলে আমি ওর বাবার মত। ও আমাকে একদিন জল খাইয়ে প্রণাম করেছিল। আজকে সেদিন এর ঋণ আমি ষোধ করতে এসেছি।আঁখি তখন ভাবে ওনাকে দেখলে কেন খালি মনে হয় উনি আমার কাছের কেউ। তখন আঁখির বাবা ওর কন্যা সম্প্রদান করে।
তারপর ওরা দুজনে একসাথে সাত পাক ঘুরে। সাতপাক ঘোরার সময় দেবা বলে আজ থেকে আমি তোর সবকিছু দায়িত্ব নিলাম ঝিলিক। আঁখি মনে মনে বলে আমি ঝিলিক নই দেবা আমি আঁখি। আমি সত্যি নয় দেবা আমি মিথ্যে কিন্তু আমার ভালোবাসাটা সত্যি। দেবা বলে কোনদিন কোন কিছু আমাদের ভালবাসাকে নষ্ট করতে পারবেনা। আখিও মনে মনে বলে যেদিন তোমার কাছে আমার সত্যিটা ঝড় হয়ে আসবে সেদিন প্রদীপের শিখা আগলে রাখার মত আমি আমাদের ভালোবাসাকে আগলে রাখবো। দেবা বলে আমরা কোনো দিন কিছু লুকাবোনা। তখন এ আঁখি দাঁড়িয়ে যাই। আখির এমন দাঁড়িয়ে যাওয়াতে সবাই অবাক হয়ে যাই।ও মনে মনে বলে আমি যে লুকিয়েসি দেবা। আমি নিজেকেই তোমার থেকে লুকিয়ে রাখসি।দেবা বলে আমরা দুজন দুজনএর পাশে থাকবো সব সময়। আঁখি ও বলে থেকো দেবা আমার পাশে থেকো। তোমাকে যে আমার খুব দরকার সব জানার পর ও যদি তুমি আমার পাশে থেকো তাহলে আমি কখনো তোমার পাশ থেকে সরে যাবোনা।
দেবা বলে আমরা যেন সারাজীবন স্বামী স্ত্রী হয়ে থাকতে পারি। আঁখি ও বলে মা কালী দেবার কোথায় যেন সত্যি হয়। ভগবান কে সাক্ষী রেখে আমি তোমার হাত থেকে সিদুর নেবো। প্রার্থনা করবো সাত জন্ম যেন তোমার স্ত্রী হয়ে থাকতে পারি।আমাদের ভালোবাসা যেন কোনোদিন ও হালকা না হয়। দেবা আঁখি কে বলে আমি কত কিছু বললাম তুই তো একটা কথাও বললি না। আঁখি তখন বলে আমি মনে মনে শপথ করেছি।তারপর দেবা আঁখি কে সিদুর পরিয়ে দেই। তারপর ঠাকুরকে প্রণাম করার সময় আঁখি মনে মনে বলে ঠাকুর আমার যা যা পাওয়ার ছিল না তুমি তাই তাই আমাকে দিয়েছো আমি যেন শাখা সিদুর এর মান রাখতে পারি। ঠাকুরকে প্রণাম শেষ আখি ওর বাবার কাছে যায় প্রণাম করতে। ওর বাবা বলে আমি তোমাদের আশীর্বাদ করছি তোমরা যেন সারা জীবন এভাবে থাকতে পারো। আর তোমার যেমন কাউকে বাবার মত দেখলে প্রণাম করে আশীর্বাদ নিতে ইচ্ছে করে। আমারও তেমন মেয়ের মত দেখলে তাকে আশীর্বাদ করে মিষ্টিমুখো করাতে ইচ্ছা করে। এই বলে পকেট থেকে একটা চকলেট বের করে ওর বাবা আঁখি কে দেয়।
তারপর চকলেটের প্যাকেটটা নিজে খুলে আঁখি এবং দেবা কে খাইয়ে দেয়। তারপর পকেট থেকে টাকা বের করে আখিকে দিয়ে বলে এই সামান্য উপহারটা আমার তরফ থেকে তুমি নাও। আঁখি তখন বলে এটা সামান্য না এটা অসামান্য বাবা। আখির মুখে বাবা ডাক শুনে তার দুই যমজ মেয়ের কথা মনে পড়ে যায়। আখিকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে দুজনই কান্না করে। তারপর ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়। হঠাৎ করে আঁখির ঝিলিকের কথা মনে পড়ে। আঁখি বলে ঝিলিক কে কেসু জানানো হয়নি তো।অন্য দিকে ঝিলিক হাসপাতাল এ ঠাকুর এর কাসে প্রার্থনা করে কান্না করে গৌরব এর জন্য। বলে ওকে তুমি ভালো করে দাও ঠাকুর।আঁখি বলে আমার এতো কষ্ট হস্ছে কেন। কেন মনে হস্ছে ঝিলিক ভালো নাই।ঝিলিক বলে আমার পেয়ারেলাল কে তুমি ভালো করে দাও। ওর কোনো ক্ষতি তুমি করোনা। এ দিকে দেবা আঁখির কাছে এসে বলে আমাকে ছেড়ে থাকতে পারবি না তাহলে সেদিন ঐ কথা কেন বললি। আমি তো ভরসা ছেড়ে দিয়েছিলাম তুই যখন আজকে কল দিয়ে বললি তুই আমাকে ভালবাসিস যেন তোকে বিয়ে করি তখন আবার নতুন করে আসা দেখেছি।