দুই শালিক সিরিয়ালের আকর্ষণীয় নতুন পর্বের আপডেট,
পর্বের শুরুতে দেখতে পাই আঁখি কে পাড়ার কিছু মেয়েরা বৌ সাজে তৈরি কোরসিলো। তখন ঝিলিক আঁখিকে কল দেয় কথা বলার জন্য। কিন্তু আঁখি কিছুতেই কল ধরছিল না। বারবার ঝিলিকের কল কেটে দিচ্ছিল। ঝিলিক তখন বলে ঠিক আছে তুই আমার কল ধরলি না তো আমি এখন দেবা কে কল দেবো। এদিকে দেবা গৌরব কে নিয়ে হাসপাতালে ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটা ফরম ফিলাপের জন্য দেয় দেবা কে সেটা পূরণ করতে বলে। তখন ঝিলিক কল দেয় দেবাকে। দেবা কল রিসিভ করলে ঝিলিক আঁখি সেজে দেবার সাথে কথা বলে। বলে দেবা আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি তুমি যদি আমাকে সত্যি ভালোবাসো তাহলে তুমি আমাকে আজকে বিয়ে কর। তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না।আমি সকালবেলা তোমার সাথে ওই ব্যবহার করার জন্য সরি তুমি তো জানো আমি বিয়েটা ইচ্ছা করে করছি না। তখন দেবা অনেকটা অবাক হয়ে যায়। দেবা বলে আমি আসবো। দেবা ফোনে কথা শেষ করে ফরম পূরণ করতে থাকে। দেবার বারবার তার মায়ের কথা মনে পড়ছিল। বারবার তার মনে হচ্ছিল আমি কেন আমার শত্রুর ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। তারপরও সে সবকিছু ভুলে ফর্মটা পূরণ করে।
তারপর বসে মনে মনে আখির কথা ভাবতে থাকে। দেবা ভাবে তোর মনে কি চলছে তুই জানিস। তুই সব কিছু গুলিয়ে দিচ্ছিস আমার । একবার বলছিস তুই আমায় ভালোবাসিস আবার সবার সামনে অবহেলা করছিস। তুই কি আমাকে সত্যিই ভালবাসিস নাকি শুধুই আমাকে ব্যবহার করছিস। তুই কি সত্যি চাস আমি তোকে বিয়ে করি। অন্যদিকে আঁখি বউ সাজে একা একা কান্না করতে থাকে। আর দেবার দেওয়া সেই ব্রেসলেট এর পুঁথি গুলো হাতে নিয়ে কান্না করে। ব্যাকগ্রাউন্ড এ একটা স্যাড সং বাজে। আঁখি নিজেই নিজেকে বলে দেবা তোমাকে নিয়ে আমার অনেক ভয় ছিল বেশি। ভালোবাসা হারানোর ভয় আমি তো কখনো কারো ভালোবাসা পাইনি। তোমার ভালোবাসা পেয়ে সেটা হারানোর ভয়টাই আমার কাছে বেশি ছিল। কিন্তু দেখো শেষ পর্যন্ত হারিয়ে ফেললাম।আরেকবার যদি তোমার সাথে দেখা হতো ক্ষমা চেয়ে নিতাম। কিন্তু সেই পথটাও আমি বন্ধ করে দিয়েছি। আজকের পর থেকে তোমার সাথে আর আমার কখনো দেখাই হবে না। তুমি হয়তো আমাকে ভুলেও যাবে। কিন্তু আমি তোমাকে কখনো ভুলতে পারবো না দেবা।
এদিকে হাসপাতলে দেবা একাই ছিল গৌরবের কাছে। গৌরবের বাড়ির লোকও আসেনি। হঠাৎ করে দেবার সামনে তার প্রতিবিম্ব আসে। বিবেক তাকে বলে তুই কেন এখানে আছিস। কি হয় ও তোর, তুইতো ফরমে লিখলি তোর ভাই কিন্তু ওর বাবা তো তোদের কে স্বীকার করেনি। একবার ভাব তোর মায়ের বলা কথাগুলো। এখান থেকে যা দেবা চলে যা তোর ভালোবাসা কে রক্ষা কর। এসব ভাবছিলে তখনই সেখানে সিস্টার আসে। বলে আপনার ভাইয়ের এ নেগেটিভ রক্ত লাগবে এখনই। দেবা তখন এদিক ওদিক না ভেবেই বলে যে আমি দেব রক্ত আমার ব্লাড গ্রুপ এ নেগেটিভ। অন্যদিকে আতর দি গিয়ে ঝিলিককে খবর দেয় বলে আঁখি গৌরবের অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি আছে অনেক খারাপ সিচুয়েশন। আমাদের এখনি হাসপাতালে যেতে হবে। দৌড়ে বাসা থেকে বের হয় ঝিলিক। গাড়ির ভেতরে যাওয়ার সময় ঝিলিক অনেক কান্না করতে থাকে। এখন গৌরবের মা বলে আঁখি কান্না করিস না ভগবানের কাছে প্রার্থনা কর যেন তোর শাঁখা সিঁদুর অক্ষয় থাকে।
হাসপাতালে দেবা আর গৌরব পাশাপাশি বেড এ শুয়ে ছিল । দেবার থেকে রক্ত নিয়ে গৌরব কে দিচ্ছিল । পিছনে ব্যাকগ্রাউন্ড এ বন্ধন তো পেয়ার কা বন্ধন হে গান টা বাজসিলো। অন্যদিকে আঁখির বিয়ের জন্য পাত্রপক্ষ চলে আসে। আখির মা বরকে বরণ করছিল। তখন একটি মজার ঘটনা ঘটে। আখির বরকে মিষ্টি খাওয়ানোর আগেই বর হা করে থাকে। এটা দেখে সবাই অনেক হাসাহাসি করে। আঁখি বিয়ের সাজে একা একা ঘরের ভিতরে বসে দেবার কথা মনে করে কান্না করতে থাকে। হাসপাতালে দেবা গৌরাতে রক্ত দিয়ে শেষ করে যখনই বাইরে বের হয় তখনই সেখানে ঝিলিকরা পৌঁছায়। দেবা পিছনে তাকায় কিন্তু কিন্তু ঝিলিককে দেবা দেখতে পায় না। ঝিলিক এতক্ষণে রুমের ভিতর ঢুকে যায়। দেবা গৌরবের বাড়ির অন্য লোক দের দেখতে পায়। তারপর দেবা ভাবে, এবার তো গৌরবের বাড়ির লোক চলে এসেছে এখানে আর আমার থাকার কোন দরকার নেই।
দেবা তখন পল্টুকে কল দেয় আর বলে তোর একটা কাজ করতে হবে। আমি না আসা পর্যন্ত আখির বিয়েটা আটকে রাখতে হবে। আমি এখনি আসছি। তখন পল্টু আর চারআনা দুজনে মিলে আঁখিদের বাড়িতে যাই। এদিকে আখির বিয়ের লগ্ন শুরু হয়ে গেছে। ঠাকুর মশাই মণ্ডপে কোনে কে নিয়ে আসতে বলেন। কোনে কে নিয়ে আসতে গেলে পল্টু আর চারআনা মিলে দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। বলে আমাদের গেটের টাকা না দিলে আমরা বউ নিতে দেবো না। ওরা মনে মনে বলে যে করেই হোক দেবা আশা পর্যন্ত বিয়েটা আটকাতেই হবে। এদিকে সবাই বলে এটা তো মেয়ের বাড়ির নিয়ম না এটা তো ছেলের বাড়ির নিয়ম। মেয়ের বাড়িতে তো কোনো গেট ধরার নিয়ম নেই। চার আনা তখন আরো ছেলেমেয়েদের ডাক দেয় ওখানে। ওরা সবাই বলে আমাদের দাবি মানতে হবে আমাদের গেটের টাকা না দিলে আমরা বউ নিতে দেবো না।