দুই শালিক সিরিয়ালের আজকের নতুন পর্বের আপডেট,
পর্বের শুরুতে আমরা দেখতে পাই আঁখিকে গান শেখানোর জন্য আঁখির মা একটা মাস্টার ঠিক করে । মাস্টার আঁখি কে গান গাইতে বললে আঁখি সুন্দরভাবে গান গাই। আঁখির মা তো খুব খুশি হয়ে মাস্টার কে বলে মাস্টারমশাই আপনি তো কামাল করে দিলেন আপনি এলেন আর আমার মেয়ের গানের গলা খুলে গেল। দেবা মনে মনে ভাবে তারমানে তুইও চাস তোর অন্য কারো সাথে বিয়ে হোক। এজন্যই ভালোভাবে গান গাইলি। আখি গান শেষ করে ওখান থেকে উঠে চলে যায়। দেবা আখির পিছনে যায়। আঁখি দূরে গিয়ে নিজেকে নিজেই বলে আমি ভুল করলাম দেবা আমাকে ভালবাসে জেনেও ওকে বলতে পারলাম না। তুমি যাকে ভালোবাসো সে ঝিলিক নয় আখি। অন্য কারো বাড়িতে থেকে অন্য কারো নাম নিয়ে বেঁচে আছি আমি। এভাবে তো ভালো থাকা যায় না আমি আর এভাবে থাকবো না। একটা রাতের জন্য সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল। আমার জন্য ঝিলিক কে ভুগতে হচ্ছে দেবা কেউ ভুগতে হচ্ছে।আমি আমার জায়গায় ফিরে চলে যাব। তখন সেখানে দেবা চলে আসে। আঁখিকে বলে তোর যে বিয়ে করার এত ইচ্ছা সেটা আগে জানতাম না তো। বিয়ের নাম শুনে এক সেকেন্ডের মধ্যে তোর গলা ঠিক হয়ে গেল। তোকে দেখতে আসছে সেটা তুই আমাকে আগে বলিস নি কেন। আঁখি বলে আমি জানতাম না দেবা। আর দেখতে আসলে কি বিয়ে হয়ে যায় তোমার আমার উপর ভরসা নেই। আখির মুখে এ কথা শুনে দেবা আঁখির দিকে তাকিয়ে থাকে ব্যাকগ্রাউন্ড একটা মিউজিক বাজতে থাকে।
অন্যদিকে ছাতা বাড়িতে সকলে মিলে উইন্টার পিকনিকের আয়োজন করে। সকলে মিলে হাতে হাতে কাজ করছিল পিকনিকের জন্য। কাকা মনি যেখানে এসে বলে লুচি গুলো ভালো করে ব্যালো যেন ফুলকো ফুলকো হয়। আতর দি বলে কিন্তু আঁখি কোথায় গেল। পিকনিকের ইভেন্ট ম্যানেজার তো সেই। এদিকে আঁখি ছাতা বাড়িতে ছাতা দাদুর মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে তার সাথে একা একা কথা বলে। বলে দাদু তুমি তো জানো আমি আঁখি নয় আমি ঝিলিক আর এই পিকনিকের আয়োজন কেন করেছি। আজকে আমি যেভাবেই হোক আখির পরিচয় খুজে বের করবই। তুমি শুধু খেলাটা দেখো। বলে পিকনিকের ওখানে চলে যাই।
সেখানেই তখন গৌরব আসে বলে এত তেল দিয়ে রান্না করছো তোমরা। আমি এসব কিছু খাব না আমি আমার সালাত খেয়ে থাকবো। গৌরবের মা বলে এটা কি তোর বিদেশ নাকি। আমরা সকলে যা খাবো তুই ও তাই খাবি। কিন্তু গৌরব তো কিছুতেই কথা শুনবে না। বলে আমি এসব কিছু খাব না আমি আমার সালাতই খাব। ঝিলিক মনে মনে ভাবতে থাকে যেভাবেই হোক আপনাকে আজকে আমি খাইয়েই ছাড়বো। তখনই ঠাকুমা বলে আজ মনে হচ্ছে ছাতা বাড়ি তার আগের রূপে ফিরে গেছে। তখন কত আনন্দ হতো, কত রমরমে ব্যবসা, সবার মাথায় মাথায় ঘুরতো কাঞ্জিলালের ছাতা। বাজারের সবথেকে বড় মাছটা আসতো ছাতা বাড়িতে। তিনি যেমন খেতে ভালোবাসতেন তেমন খাওয়াতেও ভালবাসতেন। কর্মচারীদের নিয়ে তো পিকনিক করতেন। ব্যবসা বন্ধ হওয়ার পরে যে থালাতে সবাই মাংস ভাত খেত সে থালাতে চারটি মুড়ি ভিজিয়ে খাওয়া। কোনদিন তো সেটাও জুটত না।
ঝিলিক মনে মনে ভাবছিল তাহলে পি আর কের এমন রমরমা হলো কিভাবে। তখন জেঠু মনি বলে ওঠে তখন ভাই এই সংসারটাকে সামলিয়েছে। আমরা সবাই তো সব হারিয়ে দিশেহারা অবস্থা। তখন ভাই সংসারটাকে আগলে রেখেছিল দুবেলা আমাদের দু'মুঠো অন্য জাগিয়েছিল। একটা ডুবন্ত সংসার কে ভাই বাঁচিয়ে দিয়েছিল। তখন গৌরবের মা মনে মনে ভাবে দাদাকে যত দেখি ততই অবাক হয়ে যাই। এত অপমানিত হন ভাইয়ের কাছে তারপরও ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা কমে না। জেঠু মনির এই কথায় ঠাকুমার মুখটা শুকিয়ে যায়। যেন কিছুতেই খুশি হতে পারছিল না। ঝিলিক মনে মনে ভাবে জেঠু মনের কথাই ঠাকুমা যেন কিছুতেই খুশি হননি। কিন্তু এর কারণ কি। কাকা মনির কথা শুনে তো মনে হচ্ছে পি আর কে কি একজন ভালো মানুষ। কিন্তু আঁখির মুখে যা শুনেছি আর এসে যা দেখেছি তাতে তো পুরাই উল্টো। সত্যিটা আসলে কি কার কাছ থেকে শুনবো। আজকে কিছু একটা ব্যবস্থা করতে হবে।
এদিকে রান্নাবান্না সব শেষ হয়ে গেছে। জেঠু মনি বলে এবার শুধু খাবার পালা। কিন্তু তখন গার্গী বলে পিকনিক শেষ আমি তো ব্লক বানাচ্ছিলাম। কিন্তু আমার অডিয়েন্স তো এমন বোরিং ব্লগ দেখবে না। কোন নাচ গান নেই। ঝিলিক তখন বলে ঠিকই তো আগে গান হোক খেলাধুলা হোক তারপরে খাওয়া দাওয়া। জেঠু মনি একটা গান শুনিয়ে পিকনিক টাকে মাতিয়ে দিন তো। জেঠু মনি বলে না না আমি তো গান গাইবো না গান গাইবি তুই। তখন তো ঝিলিকের মাথায় টেনশন শুরু হয়ে যায়। কারণ ঝিলিক তো গান গাইতেই পারে না। কিন্তু সবার জোরাজোরিতে গান না গেয়ে কোন উপায় নেই। বাধ্য হয়ে ঝিলিককে গান গাইতে হয়। কিন্তু ঝিলিকের গান শুনে সবাই অবাক এমন বেসুরা গান তো আঁখি গায় না।
এরপর সবাই খেতে বসে। সবাই লুচি আর মাংস খাচ্ছিল আর গৌরব খাচ্ছিল তার সালাত। যদিও তার মনে মনে মাংস লুচি খেতে ইচ্ছা করছিল কিন্ত বলতেও তো পারবেনা যে খেতে ইচ্ছা করছে। সবাই গৌরব কে বলে একটু খা একদিন খেলে কিছুই হবে না। তখনই হঠাৎ করে ঝিলিক গৌরবের মুখে লুচি আর মাংস দিয়ে দেয়। এদিকে কালিপদ খাওয়া রেখে কান্না শুরু করে দেয়। কেন কাঁদছে জিজ্ঞাসা করলে বলে। আমার কত ইচ্ছা ছিল আঁখিকে বিয়ে করবো ও আমাকে হাতে করে খাইয়ে দেবে। কাকা মনি বলে একে কেউ এখান থেকে নিয়ে যাও তো। কালিপদ বলেন তার দরকার নেই আমি একাই খাচ্ছি। ঝিলিক মনে মনে ভাবতে থাকে কেমন দিলাম আমি বলেছিলাম আপনাকে লুচি মাংস খাইয়ে ছাড়বো। সবার খাওয়া-দাওয়া শেষে রাতে বৌদি সবার জন্য চা করে। আঁখি এবং গৌরবের চা এর ভিতর ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। আর নিজে নিজে বলে তুমি নিজেও জানো না আঁখি তুমি কি হারালে। কাকা মনির দেয়া এই কাজটা যদি আমি সুন্দরভাবে করতে পারি তাহলে আগের মত আবার আমার একাউন্টে অনেক অনেক টাকা আসবে।