দুই শালিক সিরিয়ালের আজকের ধামাকাদার মহা পর্বের আপডেট ,
পর্বের শুরুতে আঁখি দেবার কাছে কল দিয়ে বলে আমি ঝিলিক বলছি। আমি জুডো সেন্টারে রুমে আছি। তুমি বাড়ি থেকে আমার কাপড় নিয়ে একটু এখানে আসবে। এই সাজে তো আমি বাড়ি যেতে পারবো না। দেবা জানতে চাই এই নাম্বার কার, আখি বলে এটা আমার নতুন নাম্বার আমার একটা বন্ধু দিয়েছে। দেবা তখন বলে আচ্ছা ঠিক আছে আমি আসছি। দেবার ঝিলিকের কাপড় নিয়ে জুডো সেন্টারে এসে দেখে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করা। দেবা ভাবতে থাকে ঝিলিক যে বলল জুডো সেন্টারে আছে কিন্তু রুমে দরজা তো বন্ধ করা। ডাক দিলে ঝিলিক দরজা খুলে। দেবা রুমে কাপড় দিতে গেলে কারেন্ট চলে যায় মোমবাতি কোথায় আছে জানতে চাইলে ঝিলিক বলে আমি তো জানিনা।দেবা বলে মোমবাতি কোথায় আছে তুই জানিস না এটা তো তোর রুম। আঁখি তখন বলে আচ্ছা আমি দেখছি। বলে যাবার সময় দেবার সাথে একে অন্যের সাথে ধাক্কা লাগে। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে থাকে আর ব্যাকগ্রাউন্ড একটা মিউজিক বাজতে থাকে। এই দিকে ছাতা বাড়িতে সবাই গৌরব আর ঝিলিকের বাসর ঘরের জন্য অপেক্ষা করছে। গৌরব কিছুতে বাসর ঘরে যেতে রাজি হচ্ছে না। অর্ক কোনো মতে গৌরব কে বুঝিয়ে বাসর ঘরে নিয়ে যেতে রাজি করাই। কিন্তু বাসর ঘরে ঢুকতে গেলে আতর দিদিরা গেট ধরে বলে ১০ হাজার টাকা না দিলে ভেতরে ঢুকতে দেবো না। গৌরব বলে আমি কিছুতেই ১০ হাজার টাকা দেব না প্রয়োজন আমি বাসর ঘরে ঢুকবোই না। এসব শুনে ঝিলিক বলে ফেলে কমই তো বলেছে বস্তিতে তো ২০ হাজার টাকা নেই। গৌরব জানতে চাই তুমি কিভাবে জানলে। ঝিলিক তখন বুদ্ধি করে বলে টিভিতে দেখেছি। তখন গৌরব বলে তুমি চুপ করবে এজন্যই আমি এখানে আসতে চাচ্ছিলাম না। আমি চলে যাচ্ছি। তখন সবাই গৌরব কে আটকায় অর্ক বলে টাকা আমি পরে দেবো এখন বাসর ঘরে ঢুকতে দে। বাসর ঘরে ঢোকার পর প্রথমে ঝিলিক আর গৌরব সবাইকে প্রণাম করে নাই। এরপর গান-বাজনা শুরু করে। সবাই বাসর ঘরে মজা করছিল তখন সেখানে পি আর কে চলে আসে। বলে চমৎকার ছাতা বাড়িতে মেহেফিল বসেছে, গান বাজনা হচ্ছে, এবার বাকি রইল তো টাকা ছড়ানো টাকাটা কি আমি ছড়াবো। তখন গৌরবের মা এসে বলে আজ অন্তত এইসব বাদ দিয়ে ছেলে বৌমাকে আশীর্বাদ করো। পি আর কে বলে আশীর্বাদ যে ছেলে তার বাবাকে অস্বীকার করে বাড়ির আশ্রিতাকে বিয়ে করে তার জন্য আমার কোন আশীর্বাদ নেই। তখন গৌরব সাথে সাথে উঠে বলে যে আমার মাকে অসম্মান করে এবং বাসর ঘরকে মাহফিল বলে তার আশীর্বাদের আমার দরকার নেই। টাকা ছাড়ানোর অনেক জায়গা পাবে তুমি কিন্তু এটা সেই জায়গা নয়। বলে গৌর পকেট থেকে টাকা বের করে ঝিলিকের মুখের কাছে ঘুরাতে থাকে তারপর ডার্গী কে ডেকে বলে এই নে তোদের দোর ধরার টাকা। তারপর বলে জেঠু মনি তুমি গান শুরু করো আমি এখানে আছি। যার থাকার সে থাকবে আর যার না থাকার সে চলে যেতে পারে।
পরদিন সকালবেলায় যাত্রাবাড়ীতে দেখতে পাই পিসিমণি সবাইকে বলে এতো নিয়ম মানার কি আছে। বিয়েটাই তো গোঝাইমিল করে হলো। তখন কাকি মনি গৌরবের মাকে বলে আখির খাবারের ব্যবস্থা কি হবে। ওতো এই বাড়ির খাবার খেতে পারবে না এখন। গৌরব ওর ভাত কাপড়ের দায়িত্ব নেবার পরও এ বাড়ির খাবার খেতে পারবে। গৌরবের মা বলে এই ব্যাপারটা তো আগে ভেবে দেখিনি। তখন ঝিলিক সেখানে আসে আর বলে একটা উপায় আছে। মেয়েদের বিয়ের পর তো তারা অন্য গোত্রের হয়ে যায়। সেই দিক থেকে পিসিমণি তো আর এখন এই বাড়ির লোক নয়। পিসি মনি রান্না করলে তো কোন সমস্যা হবে না। পিসিমণি রান্না করবে। তখন কাকি মনি বলে এই না হলে বাড়ির বউ। আমরা তো কেউ এই কথাটা ভাবি নি। ঝিলিক মনে মনে বলতে থাকে অনেক হিসেবে বাকি আছে পিসিমণি এক এক করে সব শোধ দিতে হবে।
এরপর পিসি মনি রান্না করে আর ঝিলিক পিসিমণির পাশে দাঁড়িয়ে থাকে আর জ্বালাতন করতে থাকে। বল পিসি আন্টি আমার তো খুব খিদে পেয়েছে আর কত সময় লাগবে। পিসিমণি রাগী গলায় বলে আমার কি দশটা হাত আছে নাকি আমি কি মা দূর্গা। এ বাড়িতে বিয়ে হয়েছে বলে কি সাপের পাঁচটা পা দেখেছো তুমি। তখন ঝিলিক কান্নার অভিনয় করে কাঁদতে থাকে। পিসিমণি ভাবে এইরে এবার যদি সবাই এসে দেখে নতুন বউ কান্না করছে তখন তো আমি ফেঁসে যাবো। তাই বলে পিসি মনি ঝিলিক কে কাছে টেনে নেয় আর বলে এক্ষুনি রান্না হয়ে যাচ্ছে তুমি কোন চিন্তা করো না।
এরপর সবাই খেতে বসে, ঝিলিক অন্য সাইটে খেতে বসে। ঝিলিক খাবার মুখে নিতে বমি করে দেয়। দৌড়ে চলে যায় বাথরুমে। এরপর আতর দি খাবার টেস্ট করে দেখে সব খাবার নষ্ট হয়ে গেছে। এসে সবাইকে বলে খাবার সব নষ্ট। তখন সবাই বেশি মনিকে বকা দেয়। অর্কের বউ মনে মনে খুশি হয়। সবাই ভাবে এবার আঁখি কি খাবে। তখন গৌরব বলে আমি রান্না করবো। ঝিলিক রুমে একা একা ভাবতে থাকে এবার কি সারারাত না খেয়ে থাকতে হবে। আর আমার যা বর সে তো খোঁজো নেবে না। এদিকে গৌরব ঝিলিক এর জন্য রান্না করে। ঝিলিক এসে দেখে গৌরব তার জন্য রান্না করছে। মনে মনে বলে এমন বর ই তো চেয়েছিলাম। মুখ উল্টা দিকে কিন্তু প্রেম সোজা দিকে। দু প্লেট খাবার নিয়ে টেবিলে রাখলে ঝিলিক বলে কিন্তু আতর দি এত খাবার তো আমি খেতে পারব না। তখন গৌরব বলে আরেকটা প্লেট আমার। আমিও কিছু খাইনি।এরপর দুজন দুদিকে মুখ করে খাবারটা খাই।
রাতে ঝিলিক সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে চুরি করে বস্তিতে যায়। সেখানে তার মা আর আখিকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে ঝিলিক মনে মনে বলে আমি তো এটাই চেয়েছিলাম। এতদিন আমি যে সুখ পেয়ে এসেছি আমি চাই তু্ই সেই সুখটা পা। কিন্তু তোকে এ জীবন দিতে গিয়ে আমাকে অনেক বড় মূল্য দিতে হলো আখি। বিয়ের পর মা-বাবার আশীর্বাদ আমাকে লুকিয়ে নিতে আসতে হচ্ছে। ঝিলিক আঁখিকে ডাক দেয়, আঁখি ঘুম ভেঙে উঠে দেখে বলে তুমি এখানে, ঝিলিক বলে মার জন্য খুব মন খারাপ করছে। মাকে ছাড়া ঘুম আসছে না তাই চলে আসলাম। মার কাছে একটু ঘুমাবো। আঁখি বলে ঠিক আছে তুমি ওখানে ঘুমাও। আমি ওই সাইটে আছি। কিন্তু সকাল হওয়ার আগে আবার চলে যেও না হলে ওই বাড়িতে সবাই তোমাকে খুঁজবে। ঝিলিক গিয়ে তার মার পাশে ঘুমাতে গেলে। তার মা ঘুম ভেঙে তাকিয়ে দেখে ঝিলিকের মাথায় সিঁদুর। তখন বলে ঝিলিক তোর মাথায় সিঁদুর কেন। এই বলে সে উঠে বসতেই তখন ঝিলিক লুকিয়ে পড়ে আর আখি সেখানে চলে যায়। আঁখি বলে মা তুমি কোথায় সিঁদুর দেখছ আমার তো বিয়েই হয়নি। আর মা বলে এক্ষুনি তো আমি দেখলাম তোর কপালে সিঁদুর মনে হলো নতুন বিয়ে হয়েছে। ঝিলিকের বাবা ঘুম ভেঙ্গে উঠে এসে বলে তোমাদের কি হল এত রাতে। মা বলে আমি ওর মাথায় সিঁদুর দেখলাম এক্ষুনি মনে হল। ঝিলিকের বাবা বলে তুমি সারাক্ষণ মেয়ের বিয়ে নিয়ে ভাবতে থাকো তাই এমন মনে হয়েছে তোমার। এমন কিছুই না তোমরা ঘুমাও। তখন ওরা আবার ঘুমিয়ে পড়ে।
এদিকে গৌরব সারারাত জেগে ঝিলিকের জন্য অপেক্ষা করছে। গৌরব বুঝতে পেরে গেছে ঝিলিক বাড়িতে নাই। গৌরব বলে আসুক আজকে তারপর খবর আছে। সারারাত জেগে দশ কাপ কফি খেয়েছি। তখন কাকি মনি ঘুম থেকে উঠে আসে গৌরব কে দেখে বলে কিরে তুই এখানে কেন। গৌরব বলে কারণ আছে একটু পরে দেখতে পাবে। তখনই ঝিলিক বাড়িতে ঢুকে। গৌরব তাকে জিজ্ঞাসা করে তুমি কোথায় ছিলে। ঝিলিক বলে মায়ের সাথে দেখা করতে গেছিলাম। গৌরব তখন প্রশ্ন করে তোমার তো মা নেই তাহলে তুমি কার সাথে দেখা করতে গেছিলা। তখন ঝিলিক তার হাত পিছন থেকে বের করে পূজোর প্রসাদ আর ফুল সামনে এনে বলে এই যে আমার একা না সবার মার কাছে গেছিলাম। মা তো আমার স্মৃতিতে সিঁদুর দেখে অবাক। ভাবতেই পারেনি আমার এমন ভাবে বিয়ে হয়ে যাবে। এবার গেলে আপনাকে নিয়ে যাব। গৌরব বলে তোমার সাথে আমি কোথাও যাবো না। বলে সেখান থেকে চলে যায়। ঝিনুক মনে মনে বলে মা ওর মাথাটা একটু ঠান্ডা করো না হলে ওই পিয়ারে লাল আমার মাথাটাই নষ্ট করে দেবে।
এরপর ভাত কাপড়ের অনুষ্ঠানের সময় গৌরব কে আঁখির ভাত কাপড়ের দায়িত্ব নিতে বললে গৌর রাজি হয় না। বলে আমি এটা বলতে পারব না। অনুষ্ঠান চলছিল তখন যেখানে পি আর কে চলে আসে। এসে বলে নীলিমা মায়ের কর্তব্য পালন করেছে তোমাদের বিয়েটা দিয়ে। এবার আমি বাবার কর্তব্য পালন করব। আজকে সন্ধ্যা বেলা আঁখি এবং গৌরবের রিসেপশন পার্টি ধুমধাম করে হবে। গৌরব বলে বিয়ে আমি করেছি তাই আমি ডিসাইড করবো কি হবে আর কি হবে না। তখন পিআর কে বলে তোমার বিয়েতে আমার মত ছিল না কিন্তু তুমি শোনোনি এখন আমি তোমার কোন কথা শুনবো না আমি যখন বলেছি রিসিপশন পার্টি হবে তো হবেই।তুমি চাও বা না চাও। ঝিলিক মনে মনে ভাবতে থাকে একটা নিরীহ মেয়েকে তুমি দিনের পর দিন অত্যাচার করেছো এখন লোক দেখিয়ে রিসেপশন পার্টি দিচ্ছো। আমার বিয়েতে আনন্দ করবে আমার লোকেরা। ঝিলিক আঁখি কে কল দেয় আর বলে পি আর কে তার সম্মান রক্ষা করার জন্য সন্ধ্যা বেলায় আমাদের রিসেপশন পার্টি দিছে। তুই পল্টুদা কে বলবি সন্ধ্যাবেলায় যেন ভোলু দা কে নিয়ে ভ্যান নিয়ে সাঁতা বাড়িতে চলে আসে। আমি এখান থেকে সব খাবার পাঠিয়ে দেবো। আমার বিয়ের খাবার আমার বস্তির লোকেরা আনন্দ করে খাবে। এর পর সন্ধ্যা বেলায় ঝিলিক ডাকোরেটর এর লোক দের বলে আপনাদের না গোড়া বাবু ডাকসে বকশিস দেবে বলে। ওরা চোলে গেলে ঝিলিক পল্টুদের ডেকে সব খাবার বস্তিতে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে পি আর কে এসে দেখে কোন খাবার নাই। পি আর কে গোড়ার উপর ধমক দেয় আর বলে এসবের টাকা তোর বেতন থেকে কাটবো। ঝিলিক এসব দেখে মনে মনে ভাবতে থাকে আঁখি তোর উপর করা সব অন্যায় এর বদলা নিয়েসি আমি।